জামালপুর সমিতি ঢাকার মহাসচিব, শাহাবুদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জামালপুরের প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামকে ১০ নভেম্বর বিকেলে ঢাকার পান্থপথে তাঁর নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শেখ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামকে ১১ নভেম্বর জামালপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। জামালপুর সদর থানার ওসি তদন্ত আনিসুর আসেকিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সামাজিক সংগঠনের মহাসচিব হলেও শফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে রাজনৈতিক মামলায়। গত ৩ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে জামালপুর শহরের মির্জা আজম চত্বর থেকে একটি মিছিল শুরু হয়ে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ অতিক্রম করে নতুন হাই স্কুল মোড়ে পৌঁছালে দেশি-বিদেশি অস্ত্র দিয়ে মিছিলে হামলা করা হয়।
এ সময় গুলি চালানো হলে অনেকেই আহত হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এই ঘটনার ৩ মাস পর ১ নভেম্বর জামালপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহাদত হোসেন সাগর বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার অপর আসামিরা হলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদসহ জামালপুর পাঁচটি সংসদীয় আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, জামালপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ চৌধুরী, জামালপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানু, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারহান আহমেদ, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাফিউল করিম রাব্বি, জেলা যুবলীগ নেতা রেজোয়ান রাজন, মোখলেসুর রহমান, সাইফুল্লাহ ইসলাম ও সাকিবুল হাসানসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ থেকে ৩০০ জন।
এর আগে এই ঘটনায় আরও কয়েকটি মামলা হয়েছে, সেখানে শুধু রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরকেই আসামি করা হয়েছিল। শফিকুল ইসলামের পরিবার বলছে, তিনি কখনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর এইচডিএফসি সিন-পাওয়ার লিমিটেড নামে ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুরে সুতিয়াখালী নদীর পাড়ে মালয়েশিয়া সিঙ্গাপুরের সাথে যৌথ বিনিয়োগে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করেন।
শফিকুল ইসলাম বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। ঢাকায় অবস্থানরত জামালপুর জেলার বাসিন্দাদের সামাজিক সংগঠন জামালপুর সমিতি, ঢাকার মহাসচিব হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। জামালপুরের একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জামালপুর সমিতি ঢাকার নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিত এই মামলা করা হয়েছে। এমন ঘটনা ঘটতে থাকলে, সমাজসেবা করতে চান এমন অনেকেই সামাজিক সংগঠন বিমুখ হবেন এবং সামাজিক কাজকর্ম থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন।