একাত্তর সময় সংবাদ।।
সরকারের টানা এক যুগের কূটনৈতিক সাফল্য নজর কেড়েছে গোটা বিশ্বের। কোনো তিক্ততা ছাড়াই ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে মামলায় সমুদ্রসীমা জয়, সমঝোতার মাধ্যমে ছিটমহল বিনিময় ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা কূটনৈতিক পরিপক্কতার অনন্য দৃষ্টান্ত বলে জানান বিশ্লেষকেরা।
সরকার পরিচালনার ১২ বছরে আওয়ামী লীগ। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সরকার গঠন করে টানা ৩ মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনায় দলটি। ২০১২ সালে মিয়ানমার, ২০১৪তে ভারতের সঙ্গেও সমুদ্রসীমা বিবাদের হয়েছে শান্তিপূর্ণ মীমাংসা। ঢাকা-দিল্লির মধ্যে ১৬২টি ছিটমহল বিনিময় ২০১৫ সালের জুলাইয়ে। ঐতিহাসিক এ ঘটনার মধ্যে দিয়ে ইতি টানা হয় দুদেশের মধ্যে ৪১ বছরের ঝুলে থাকার অমীমাংসিত ইস্যুটির।
এছাড়া করোনা মহামারির সময় অথনৈতিক কূটনীতিতেও বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে সরকার।
বহু সংগ্রামের পর ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা চলে গেলে পূর্ব পাকিস্তান হিসেবে স্বীকৃতি পেল বাংলাদেশ। তবে তাতে স্বস্তির চেয়ে যন্ত্রণা বাড়ে বাংলাদেশের। অর্থনীতি, সমাজনীতি, রাজনীতি, রাষ্ট্রব্যবস্থাসহ সব ক্ষেত্রেই শুরু হলো শোষণ আর বঞ্চনা। এরপর বঙ্গবন্ধুর প্রগাঢ় নেতৃত্বে রাজনৈতিক নানা ঘটনার বাক-পরিক্রমায় একাত্তরে দীর্ঘ নয় মাসের যুদ্ধের পর বাংলাদেশ পেল লাল-সবুজের নতুন পতাকা। বিশ্বে পরিচয় পেল স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে। নতুন বাংলাদেশ গঠনের শুরুতেই সবার সঙ্গে সুসম্পর্ককে প্রাধান্য দেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বঙ্গবন্ধুর সফল পররাষ্ট্রনীতির কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে- স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে বাংলাদেশ বিশ্বের ১১৬টি দেশের স্বীকৃতি লাভ করে। বিশ্বসভায় বঙ্গবন্ধু শ্রদ্ধার আসনে সমাসীন হন। সে সময় বাংলাদেশ যেসব আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কমনওয়েলথ অব ন্যাশনস্, জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন, ইসলামিক সম্মেলন সংস্থা ও জাতিসংঘ। এ ৪টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিটি সম্মেলন ও অধিবেশনগুলোয় বঙ্গবন্ধু ছিলেন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়, বঙ্গবন্ধুর দেখানো এই পররাষ্ট্রনীতির পথে হেঁটেই অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই প্রতিবেশী দেশের কাছ থেকে ন্যায্য হিস্যা আদায় সম্ভব হয়েছে বলে মনে করে সরকার।
বিশ্লেষকেরা বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতা ও অপরিবর্তিত কূটনৈতিক আর্দশের কারণেই এসেছে সাফল্য। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্ব নেতাদের প্রশংসার কুড়ানোর পাশাপাশি হয়ে উঠে উন্নয়নের রোল মডেল। দারিদ্র-দূর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ানের অপবাদ ঘুঁচিয়ে পেয়েছে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী রাষ্ট্রের পরিচিতি।